
চরাঞ্চল মানুষের জীবন মানন্নোয়নে হাবিপ্রবি শিক্ষার্থীর রিসার্চ

হাবিপ্রবি প্রতিনিধিঃ চরাঞ্চল মানুষের জীবন : দেশ ও জাতিকে সমৃদ্ধ করতে শহর –নগর,গ্রামকিংবা গঞ্জ প্রতিটি অঞ্চলের মানুষের মাঝে পরিবর্তন নিয়ে আসতে হবে। ঘটাতে হবে যোগাযোগও জীবিকার প্রসার ।কেননা কাউকে বাদ দিয়ে দেশের সার্বিক উন্নয়নসম্ভব নয় ।দেশ গঠনে আছে প্রতিটি শ্রেনী-পেশা মানুষের অসংখ্য অবদান ।তাই প্রতিটিঅঞ্চলের মানুষের জীবন যাপনে পরিবর্তন আসলে তবেই এগিয়ে যাবে দেশ ও জাতি ।আর সেইলক্ষ্য –উদ্দ্যেশ্য আর অনুপ্রেরণাকে সারথী করে হাজীমোহাম্মদ দানেশ বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়ের কৃষি বনায়ন ও পরিবেশ বিভাগের প্রফেসর ড. মো. সফিকুল বারীর নেতৃত্বে মাস্টার্সে অধ্যয়নরত কিছু শিক্ষার্থী নীলফামারীর ডিমলা তিস্তা চরাঞ্চলের দরিদ্র মানুষের জীবনমানোন্নয়নের জন্য নতুন প্রকল্প নিয়ে কাজ করে যাচ্ছেন।
যদিও এখন আগেকার সেই নির্মম দৃশ্য খুঁজে পাওয়া যাবে না। সেই চরগুলোই এখন গ্রামীণ অর্থনীতির মজবুত ভিত্তির ওপর দাঁড়িয়ে আছে। শুধু তাই নয়, চরাঞ্চলের কৃষি আধুনিকতার ছোঁয়ায় নিজে নিজেই যেন পাল্টে গেছে, যাচ্ছে।
আবহাওয়া অনুকূলে থাকায় উত্তরাঞ্চলীয় জেলা নীলফামারীর ডিমলায় এখন নানা ধরনের ফসলের ব্যাপক চাষাবাদ হচ্ছে । তিস্তা নদীর চরেও ব্যাপক হারে বিভিন্ন প্রকার ফসল আর মসলার চাষাবাদ করেছে কৃষক। আগে যেখানে বছরে একবার শুধু ধান চাষ করা হতো।কিন্তু এখন সেখানে বাড়তি হিসেবে ফলানো হচ্ছে শীতকালীন বিভিন্ন ফসল। এছাড়া, অতীতের সব অপ্রচলিত শস্য এখন এখানে জনপ্রিয়তা পাচ্ছে। তাই জেলার চরাঞ্চলগুলোতে এসব ফসল আবাদের প্রতি ঝুঁকছে কৃষককুল। এরফলে ক্রমান্বয়ে দূরীভূত হচ্ছে মঙ্গা।আর কেটে যাচ্ছে হতদরিদ্র কৃষকের জীবনের সব দুর্দশা।
এক সময় কৃষক ভাবতেন, চরে যদি কাশফুল জন্মে, তাহলে শস্য কেন ফলানো যাবে না। শুরু হল সবজি ও ফসল ফলানোর পরীক্ষা-নীরিক্ষা। পরীক্ষা সফল প্রমাণিত হওয়ার পর প্রথম চরে বোনা হয় সরিষা। পরে ভুট্টা, ধনিয়া ও মরিচসহ বিভিন্ন সবজি এখন চাষ করা হয়। তিস্তার একেকটি চর এখন যেন একেকটি ফসলের ভান্ডার। বর্তমান কৃষি বান্ধব সরকার তিস্তা চরে কৃষিতে আধুনিকতার ছোঁয়া দিতে নানা কর্মসূচী হাতে নিয়েছে। এর মধ্যে আছে ক্ষুদ্র ঋণ, কৃষিঋণ, বীজ ও সার সহায়তা।
হাবিপ্রবির কৃষি বনায়ন ও পরিবেশ বিভাগের প্রফসের ড. মো. সফিকুল বারীর উদ্যোগে প্রথম বারের মতো নীলফামারীর ডিমলা তিস্তার চরাঞ্চলে ভূট্রার সাথে চাষাবাদ করা হচ্ছে সাজিনা গাছ ।মরিচ-রসুন এর সাথে করা হচ্ছে মাল্টার চাষাবাদ ।এর ফলে জমির যেমন উৎপাদন ক্ষমতা বাড়ছে ।তেমনি বাড়ছে মাটির উর্বরতা ও সুরক্ষতা ।কৃষকরাও তুলনামূলক ভাবে বেশি লাভবান হচ্ছে বলে জানিয়েছেন সেখানকার কয়েকজন কৃষক ।
কয়েকদিন আগে হাবিপ্রবি’র কৃষি বনায়ন ও পরিবেশ বিভাগের চেয়ারম্যান প্রফেসর ড. মো. শোয়াইবুর রহমান মাঠ পরিদর্শনে গিয়ে বলেন, কয়েক বছর আগেও চরের মানুষ বলতে দরিদ্রদের বোঝাত। কারণ তখন এরা ছিল রিলিফনির্ভর জনগোষ্ঠী। আর এখন পরিস্থিতি সম্পূর্ণ পাল্টে গেছে।চরাঞ্চলের জমি গুলোতে এখন বিভিন্ন জাতের ফসল চাষাবাদ হচ্ছে ।এতে যেমন জীবন যাপনে কিছুটা পরিবর্তন আসছে সেটা সত্য ।কিন্তু আমাদের আবহাওয়া প্রতিনিয়ত যেভাবে পরিবর্তন হচ্ছে তাতে কখন বন্যায় প্লাবিত হয় এইসব জমি তার একটা আশংকাও কিন্তু থেকেই যাচ্ছে আমাদের ।তাই আমরা পরিবেশ বান্ধব কিছু গাছ এই ফসলের জমির ফাঁকে ফাঁকে লাগিয়েছে ।এতে করে আমরা মনে করি,কোন কারনে ঐ কৃষকের জমিতে পানি উঠলেও আর্থিক লোকসান কম হবে।গাছগুলো শেল্টার হিসাবে কাজ করবে।মাটির কম ক্ষয়প্রাপ্ত হবে ।এছাড়া মাটির উর্বরতা বৃদ্ধি পাবে ,উৎপাদনশীলতা বাড়বে।কৃষক একই জমি থেকে আর্থিকভাবে বেশি লাভবান হতে পারবেন । সামজিক বনায়ন সৃষ্টি হবে ,অনেকর কর্মসংস্থানও হবে ।ফলে,জীবন –মান আরও উন্নত হবে,পাশাপাশি দেশের ভারসাম্য ঠিক থাকবে আশাকরি ।
Leave a Reply