কৃষিসংবাদ

টার্কি ও খরগোশ পালনে উদ্বুদ্ধ করতে হাবিপ্রবি ও বিজিবির যৌথ উদ্যোগ গ্রহণ

আব্দুল মান্নান,হাবিপ্রবিঃ

সীমান্ত এলাকায় মাদক চোরাচালানকারীদের স্বাভাবিক জীবনে ফিরিয়ে আনতে হাজী মোহাম্মাদ দানেশ বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয় (হাবিপ্রবি) এবং বর্ডার গার্ড বাংলাদেশ (বিজিবি), দিনাজপুর যৌথভাবে এক ভিন্নধর্মী উদ্যোগ নিয়েছেন। মাদক চোরাচালানকারীদের ট্রেনিং দিয়ে খরগোশ ও টার্কি পালনে উদ্বুদ্ধ করা হবে যাতে তারা নিজেদের পরিবারের প্রাণীজ আমিষের চাহিদা পূরণ করতে ও তাদের অর্থনৈতিক অবস্থার উন্নতি ঘটিয়ে স্থায়ীভাবে স্বাভাবিক জীবনে ফিরে আসতে পারে। এই সময়োপযোগী  উদ্যোগের অংশ হিসেবে হাবিপ্রবি-এর জেনেটিক্স এ্যান্ড এনিমেল ব্রিডিং বিভাগের চেয়ারম্যান প্রফেসর ড. আব্দুল গাফ্ফার মিয়া  গতকাল বিজিবি ক্যাম্প এর শহীদ কর্নেল গুলজার হলে খরগোশ ও টার্কি পালনে প্রেরণা প্রদান অনুষ্ঠানে বক্তব্য প্রদান করেন।
 শুরুতেই তিনি টার্কি ও খরগোশের গোস্ত হালাল না হারাম তা নিয়ে  আলোচনা করেন। তিনি বুখারী শরীফের ৩:৭৪৬ নং হাদিসের উদ্ধৃতি দিয়ে খরগোশের গোস্ত যে হালাল তা বুঝিয়ে দেন। এছাড়াও তিনি বলেন, কোরআন হাদিসের আলোকে খরগোশের গোস্ত খাওয়া সম্পূর্ন রূপে হালাল, তবুও অনেকে খরগোশের গোস্ত খাওয়াকে হারাম বলে মনে করেন। আবার অনেকে বলেন, শুধুমাত্র বিভক্ত ক্ষুর বিশিষ্ট (ছাগল বা হরিণের পায়ের মত) খরগোশের গোস্ত খাওয়া হালাল, আর বিড়ালের পায়ের মত থাবা বিশিষ্ট খরগোশ হারাম। যা একটা প্রচলিত কুসংস্কার ব্যতীত আর কিছুই নয়। Canadian Executive Service Organization (CESO) এর বর্ণনা মতে, বিভক্ত ক্ষুর বিশিষ্ট খরগোশের অস্তিত্ব নিছক একটা কাল্পনিক ও ভৌতিক গল্প, তাদের মতে Lagomorphs শ্রেণীর ইউরোপিয়ান বন্য খরগোশের (Oryctolagus cuniculus) পা বিভক্ত ক্ষুর বিশিষ্ট নয়, থাবা বিশিষ্ট। প্রকৃতিগতভাবেই খরগোশ বিভক্ত ক্ষুর বিশিষ্ট প্রাণি নয়। প্রকৃত পক্ষে ছাগল বা হরিণের পায়ের মত বিভক্ত ক্ষুর বিশিষ্ট কোন জাতের খরগোশের অস্তিত্ব পৃথিবীতে নাই বা কোন কালেও ছিল না।
আর টার্কিতো মুরগির মতই পোল্ট্রির একটা প্রজাতি, যার গোস্ত সম্পূর্ণরূপে হালাল। পরিশেষে, প্রফেসর ড. গাফ্ফার এ প্রকল্পের কন্সাল্টেন্ট হিসেবে কাজ করার আশ্বাস দিয়ে তিনি তার বক্তব্যের সমাপ্তি টানেন। উক্ত প্রেরণা  প্রদান অনুষ্ঠানে বিএ-৫৭৫০ লেঃ কর্ণেল মোহাম্মদ মাহবুব মোর্শেদ, পিএসসি (পদাতিক), পরিচালক, ৪২ বর্ডার গার্ড ব্যাটালিয়ন, দিনাজপুর এবং বিএ-৪৫০৬ মেজর আব্দুল হান্নান খান , (ই-বেঙ্গল) উপ-অধিনায়ক, ৪২ বর্ডার গার্ড ব্যাটালিয়ন, দিনাজপুর যথাক্রমে স্বাগত ও সমাপনী বক্তব্য দেন। এছাড়াও, উক্ত অনুষ্ঠানে অফিসার-০২ জন , জেসিও-১০ জন , অন্যান্য পদবীর-১৩১ জন এবং অসামরিক-০১ জন, সর্বমোট=১৪২ জন উপস্থিত ছিলেন। অনুষ্ঠানের শেষপর্যায়ে উপস্থিত সকলেই টার্কি ও খরগোশ পালনের মাধ্যমে চোরাচালানিদের সঠিক পথে ফিরিয়ে আনার প্রত্যয় ও আশা ব্যক্ত করেন ৷
Exit mobile version