মোঃ মোশারফ হোসেন,বিশেষ প্রতিনিধি:
সুগার বিটের জাত উন্নয়ন ও জাত ছাড়করণ প্রক্রিয়ার অংশ হিসেবে বাংলাদেশ সুগারক্রপ গবেষণা ইনস্টিটিউটের আওতায় বিএসআরআই জামালপুর উপকেন্দ্রসহ বিভিন্ন এলাকায় স্থাপিত সুগার বিটের প্রর্দশনী প্লট পরিদর্শণ করেছেন উর্ধ্বতন কর্মকর্তাগন।
উর্ধ্বতন কর্মকর্তাদের নিয়মিত সুগার বিটের প্রদর্শনী প্লট পরিদর্শনের অংশ হিসেবে রবিবার বিএসআরআই জামালপুর উপকেন্দ্রের প্রদর্শনী প্লট পরিদর্শন করেন বাংলাদেশ সুগারক্রপ গবেষণা ইনস্টিটিউটের বিজ্ঞানীগন এবং ৩১ মার্চ শনিবার বিএসআরআই জামালপুর উপকেন্দ্রের প্রদর্শনী প্লটসহ জিলবাংলা চিনিকল, দেওয়ানগঞ্জ এবং শেরপুর জেলার নকলা ও ঝিনাইগাতী উপজেলায় স্থাপিত সুগার বিটের গবেষনা ও প্রদর্শনী প্লট পরিদর্শন করেন মহাপরিচালক ড. মোঃ আমজাদ হোসেন। এ সময় বিএসআরআই এর বিজ্ঞিানীগনসহ বাংলাদেশ সুগারক্রপ গবেষণা ইনস্টিটিউট, জামালপুর উপকেন্দ্রের ইনচার্জ ড. খন্দকার মহিউল আলম ও কৃষি ওভারশিয়ার মোঃ আল মামুন প্রমুখ উপস্থিত ছিলেন।
পরে এক আলোচনা ও মতবিনিময় সভায় সুগার বিট প্রদর্শনী প্লটের সাথে জড়িত কর্মকর্তা-কর্মচারী ও কৃষকদের নিরলস কাজের প্রতি সন্তুষ প্রকাশসহ সবাইকে ধন্যবাদ জ্ঞাপন করেন পরিদর্শক-বক্তাগন।
উল্লেখ্য যে, বাংলাদেশ সুগারক্রপ গবেষণা ইনস্টিটিউট (বিএসআরআই),ঈশ্বরদী; পাবনার ফিজিওলজি এন্ড সুগার কেমিস্ট্রি বিভাগের বাস্তবায়নে ও বিএসআরআই-এর সমন্বিত গবেষনা কার্যক্রম জোরধার করন প্রকল্পের সহযোগিতায় এবং বিএসআরআই জামালপুর উপকেন্দ্রের আওতায় সুগার বিট চাষে সফলতা পাওয়া গেছে। এর ফলে চিনি তৈরীতে আখের পরিবর্তে সুগার বিটের মাধ্যমে কৃষি অর্থনীতিকে ত্বরান্বিত ও সমৃদ্ধ করতে নতুন আশা দেখা দিয়েছে। তবে ব্যাপকভাবে এই ফসলের চাষ বৃদ্ধি ও চিনি উৎপাদনের ব্যবস্থা করতে হবে। দেশের সব উঁচু ও মাঝারি উঁচু এবং অনাবাদি জমিতে এর চাষ করতে পারলে এবং স্বল্প ব্যয়ে চিনি উৎপাদনের ব্যবস্থা করতে পারলেই কৃষক হবেন অর্থনৈতিকভাবে লাভবান; এমনটাই মনে করছেন ইক্ষু ও কৃষি গবেষকরা।
চলতি মৌসুমে বাংলাদেশ সুগারক্রপ গবেষণা ইনস্টিটিউট, জামালপুর উপকেন্দ্রের আওতায় চার বিঘা জমিতে প্লট আকারে চিনি উৎপাদন হয় এমন জাতের সুগার বিট চাষ করা হয়েছে। তারমধ্যে শেরপুরের নকলা উপজেলার পাঠাকাটা ইউনিয়নের পাঠাকাটা গ্রামে দুই বিঘা, বাংলাদেশ সুগারক্রপ গবেষণা ইনস্টিটিউট, জামালপুর উপকেন্দ্র এলাকায় এক বিঘা এবং জামলপুরের অন্য এলাকায় এক বিঘা জমিতে সুগার বিটের উপযোগীতা যাচাইয়ের জন্য পরীক্ষা মূলকভাবে চাষকরে ব্যাপক সফলতা পাওয়া গেছে। ফলন দেখে অনেকেই মনে করছেন, সমতল এবং উঁচু ও মাঝারী উঁচু জমির অন্য আবাদের চেয়ে সুগার বিটের উৎপাদন বেশি। তবে উৎপাদিত সুগার বিট থেকে আজও চিনি তৈরী করা শুরু হয়নি। সুগার বিট থেকে চিনি তৈরীকরা শুরু হলে এর চাষ দেশ ব্যাপী ছড়িয়ে পড়বে বলে মনে করা হচ্ছে।
আশার বিষয় হলো- সরকার ইতোমধ্যে ঠাকুরগাঁও সুগার মিল লিমিটেড কোম্পানীতে সুগার বিট থেকে চিনি উৎপাদনের জন্য ৫০০ কোটি টাকা ব্যয়ে আলাদা মেশিন সংযোজনের কাজ শুরু করেছে। ২০১৯ সালের দিকে ওই কোম্পানীতে সুগার বিট থেকে চিনি উৎপাদন শুরু হবে বলে আশা করছেন, বাংলাদেশ সুগারক্রপ গবেষণা ইনস্টিটিউটর কর্মকর্তাগন। তারা জানান, দেশে চিনির চাহিদা পূরণের জন্য প্রায় ১৪ লাখ মেট্রিকটন চিনি বিদেশ থেকে আমদানী করতে হয়। কিন্তু এদেশে সুগার বিট থেকে চিনি উৎপাদন করা শুরু হলে আমদানীর পরিমাণ অনেক কমে আসবে। তাতে চিনি আমদানী বাবদ কোটি কোটি টাকা বিদেশে যাওয়া কমবে, পাশাপাশি বাড়বে কর্মসংস্থান।