কৃষিসংবাদ

খাদ্য নিরাপত্তার স্বার্থেই শস্যবীমা চালু করা প্রয়োজন

কৃষিবিদ মোঃ নূরুল হুদা আল মামুন

ধান কাটার মৌসুম। গ্রাম বাংলার অনেক স্থানে বোরো ধান তোলার ধুম লেগেছে। কৃষক ধান কাটতে ব্যস্ত আর কৃষাণির চোখে মুখে নানা স্বপ্নের উকিঁ ঝুকি। এমনি এক সময়ে যখন অনেকে ধান কাটা নিয়ে ব্যস্ত ঠিক তখন কেউ বা আবার চরম হতাশায় চোখে সর্ষে ফুল দেখছেন। এমনই এক হতভাগ্য কৃষক ইমান আলীর সাথে দেখা হয় শেরপুর জেলার ঝিনাইগাতি উপজেলা কৃষি অফিসে। হাজারো প্রশ্ন ও দানা হীন ধানের আটি নিয়ে উপজেলা কৃষি কর্মকর্তার দরবারে হাজির হন কৃষক ইমান আলী। “স্যার আমার ক্যান এমন অইল,সকলের জমিনে ধান আর আমার জমিনে সব ধান চিটা। একটু বিরতি দিয়ে আবার বলতে থাকে ইমান,“আমি পরিবার নিয়া ক্যামনে খামু,ক্যামনে চলুম…আমারে একটা ব্যবস্থা কইরা দ্যান”। ইমান আলীর সাথে আলাপ করে জানা যায় চলতি বোরো মৌসুমের শুরুতে অন্য চাষীদের মত ইমান আলী ও এলাকার বিএডিসির বীজ ডিলার আব্দুল হাই এর কাছ থেকে ব্রি ২৮ জাতের বীজ কিনে স্বাভাবিক নিয়মে চাষাবাদ করেন। বীজের কারনে ইমান আলীর ধান মার খেয়েছে বলে মন্তব্য করেন উপজেলা কৃষি কর্মকর্তা। এখন বীজ ডিলার এর দায় দায়িত্ব নিতে চান না। দিতে চান না কোন ক্ষতি পূরণও। এমন অবস্থা আমাদের দেশের কৃষকের নিত্যকার দিনের চিত্র। আমাদের যারাঁ ক্ষুধার অন্ন যোগান দেন তাদেরকে অবশ্যই নিরাপত্তা বেষ্টনির আওতায় আনতে হবে। আর এ কারনে উঠে আসে শস্যবীমার কথা। বিভিন্ন ধরনের অনিশ্চয়তা ও প্রাকৃতিক দূর্যোগের কারনে ফসল উৎপাদনে কৃষক সবসময় ঝুঁকির মধ্যে থাকে। এর মধ্যে কিছু কিছু ঝুঁকি কৃষক নিজে সমাধান করতে পারলেও নিম্মমানের বীজ ও প্রাকৃতিক দূর্যোগের মতো বড় ধরনের ঝুঁকির জন্য সামাজিক ব্যবস্থাপনার প্রয়োজন হয়। কৃষকের জন্য এ ধরনের সামাজিক ব্যবস্থাপনার অন্যতম হলো শস্য বীমা কার্যক্রম।

উন্নত বিশ্বের অভিজ্ঞতা
১৯৪০ সালে পৃথিবীতে প্রথম শস্যবীমা চালু করে জাপান ও মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র। তখন যুক্তরাষ্ট্রে শস্যবীমার আয়-ব্যায় সমান থাকলেও জাপানে সরকারকে ভর্তূকি দিয়ে আয় ব্যায়ের সমতা আনতে হতো । পরে বিশ্বের বিভিন্ন দেশে এটি চালু করা হয় । আমেরিকাতে বর্তমানে প্রচলিত ফসল বীমা কার্যক্রম শত বছরের পরীক্ষা নীরিক্ষার ফসল। প্রথম দিকে প্রাইভেট ইন্সুরেন্স কোম্পানী দ্বারা ”মাল্টি রিস্ক” ক্রপ ইন্সুরেন্স কার্যক্রম গ্রহণ করা হলেও তা সফলতার মুখ দেখেনি। পরবর্তীতে এটি একটি রাজনৈতিক ইস্যুতে পরিণত হয়। ফ্রাংকলিন রুজভেল্ট ক্ষমতায় আরোহনের পর ক্রপ ইন্সুরেন্স কার্যক্রমকে গুরুত্বের সাথে বিবেচনা করেন । তিনি ১৯৩৮ সালে ফেডারেল ক্রপ ইন্সুরেন্স এ্যাক্ট জারি করেন এবং পরবর্তী বছর রাষ্ট্রের তত্ত্বাবধানে ফেডারেল ক্রপ ইন্সুরেন্স কর্পোরেশন গঠন করেন।
প্রথমদিকে সীমিত কিছু ফসলে পরীক্ষামূলক ভাবে ক্রপ ইন্সুরেন্স চালু করা হয় কিšতু দূর্বল ব্যবস্থাপনার কারনে এক বছর পরই তা বন্ধ হয়ে যায় । পরবর্তীতে মার্কিন কংগ্রেসে বিষয়টি পূনরায় আলোচনা কর হয় । এবং ঝুকির ক্ষেত্র বৃদ্ধি করে পুনরায় চালু করা হয় । এসময় এক বা একাধিক বছরের চুক্তিভিত্তিক বীমা কার্যক্রম সহ ফসল ও অঞ্চলভেদে ভিন্ন ভিন্ন প্রিমিয়াম রেট নির্ধারন করা হয় । ১৯৮০ সালে জারিকৃত ক্রপ ইন্সুরেন্স এ্যাক্টে কতগুলো মৌলিক পরিবর্তন আনা হয় । এর মধ্যে ছিল বীমা প্রিমিয়াম এর উপর ভর্তূকী প্রদান এবং প্রাইভেট ক্রপ ইন্সুরেন্স এজেন্সিকে অনুমতি ও প্রয়োজনীয় সহযোগিতা প্রদান । এর মাধ্যমে আমেরিকায় শস্যবীমা কার্যক্রম অতি অল্প সময়ে প্রায় ৭০ ভাগ কৃষকের মাঝে বি¯তৃত হয় ।
১৯৯৪ সালে, যে কোন প্রাকৃতিক দূর্যোগে কৃষকদের সরকারী সহায়তা পাবার শর্ত হিসাবে শস্যবীমা করা বাধ্যতামূলক করা হয় । ২০০০ সালে ”এগ্রিকালচারাল রিস্ক প্রোটেকসন এ্যাক্ট” অনুমোদন করা হয় যার আওতায় সরকার প্রতিষ্ঠিত ’ রিস্ক মেনেজম্যান্ট এজেন্সি’ শস্যবীমা কার্যক্রম তদারকি করে থাকে । বর্তমানে আমেরিকার ফেডারেল ক্রপ ইন্সুরেন্স প্রোগ্রাম একটি সরকারী-প্রাইভেট সমন্বিত সেক্টর যেখানে প্রায় ১৯ টি প্রাইভেট এজেন্সি কর্মরত । এসব প্রাইভেট এজেন্সিগুলো খামারীদের নিকট পলিসি নিয়ে যায়, প্রিমিয়াম সংগ্রহ করে এবং নির্ধারিত দাবী পরিশোধ করে এবং সরকার ভর্তূকী, রি-ইন্সুরেন্স সুবিধা সহ কারিগরী সহযোগিতা প্রদান করে।

ভারতের শস্য বীমা কার্যক্রম

এই উপমহাদেশে ভারতে সর্বপ্রথম শস্যবীমা কার্যক্রম চালু করা হয় । ১৯৭৩ সালে কৃষক পর্যায়ে তুলা ও চীনাবাদামের উপর শস্যবীমা কার্যক্রম শুরু করা হয় কিন্তু দূর্বল ব্যবস্থাপনায় ক্ষতির হার দশগুন বৃদ্ধি পাওয়ায় ১৯৭৬ সালে তা বন্ধ করে দেয়া হয় । ১৯৭৯ সালে আবার পাইলট স্কিমের আওতায় এলাকা ভিত্তিক ক্রপ ইন্সুরেন্স চালু করা হয় । এসময় ক্ষুদ্র ও প্রাšিতক কৃষকদেরকে সরকারীভাবে ৫০ ভাগ প্রিমিয়াম ভর্তূকী প্রদান করা হয় । পরবর্তীতে এ ভর্তূকী ৬৬ ভাগে উন্নিত করা হয় ।
এছাড়াও দানাদার ফসলের জন্য প্রিমিয়াম রেট শতকরা পাঁচ ভাগ থেকে কমিয়ে দুই ভাগে এবং তেল ও ডাল জাতীয় ফসলের জন্য এক ভাগে কমিয়ে আনা হয় । ফসল উৎপাদনে ঝুঁকির প্রকৃতি অনুযায়ী ফসলকে উচ্চ, মধ্যম ও নিম্ম ক্যটাগরিতে বিভক্ত করা হয়। স্কিম এলাকায় ফসল উৎপাদনে প্রাতষ্ঠানিকভাবে ঋণ গ্রহণকারীদের জন্য ক্রপ ইন্সুরেন্স বাধ্যতামূলক করা হয় । ১৯৯৯ সালে প্রবর্তিত জাতীয় কৃষি বীমা স্কীমে ফসল মৌসুম ভিত্তিক প্রিমিয়াম রেট নির্ধারন করা হয় । এবং দানা ও তেলজাতীয় ফসলের ক্ষেত্রে প্রথম পাঁচ বছর ক্ষতির ১৫০ গুন এবং পরবর্তীতে ২০০ গুন পরিশোধের ব্যবস্থা করা হয় । গুনগত বীজ উৎপাদনের জন্য বর্তমানে ভারতে বীজ শস্য বীমা নামে আরেকটি পাইলট স্কিম চালু রয়েছে ।

বাংলাদেশে শস্যবীমা প্রকল্প
ঘূর্ণিঝড়, বন্যা, জলোচ্ছাস, শিলাবৃষ্টি ও পোকামাকড়ে ফসলের ক্ষতি হলে কৃষককে রক্ষার লক্ষ্যে ১৯৭৭ সালে বাংলাদেশ সরকার শস্য বীমা পকল্প চালুর সিদ্ধান্ত গ্রহণ করে । প্রকল্প বাস্তবায়নের দায়িত্ব দেওয়া হয় সাধারণ বীমা কর্পোরেশনের উপর । প্রাথমিক ভাবে দুটি জেলার দুটি উপজেলা বাছাই করে পরীক্ষামূলকভাবে শস্য বীমা পাইলট প্রকল্প চালু করা হয় । নির্বাচিত উপজেলা গুলোর অনুন্য ৫ টি কৃষক সমবায় সমিতিকে শস্যবীমার আওতায় আনা হয় । দুর্যোগ ও পোকামাকড়ের আক্রমনের ন্যায় আপদে বীমার ঝুকি গ্রহণ করা হতো ।
জমিতে ৫ বছরের উৎপাদিত ফসলের গড় মূল্যের ভিত্তিতে বীমাংক নির্ধারণ করা হতো । বীমাকারীর দায় উক্ত বীমাংকের শতকরা ৮০ ভাগ ছিল , যা বীমাকৃত পুঁজি হিসাবে ধরা হতো । ১৯৯৫ সালে অর্থ মন্ত্রনালয়ের নির্দেশে প্রকল্প বন্ধ হয়ে যায় । প্রকল্পটি বন্ধ হয়ে যাবার পূর্বে পলিসি গ্রহিতার সংখ্যা ছিল ২৩৭৬ এবং বীমাকৃত জমির পরিমাণ ছিল ২৩,৭৯৪.৪৩ একর । বীমাকৃত অর্থের পরিমাণ ছিল ১১ কোটি ৫ লাখ ২০ হাজার ২৭৭ টাকা । প্রিমিয়াম বাবদ আয় হয়েছিল ৩৯ লাখ ৬২ হাজার ৩৭৭ টাকা। ফসলের ক্ষতিপূরণ বাবদ দাবি পরিশোধের পরিমাণ ছিল ১ কোটি ৯৭ লাখ ৬৬ হাজার ৮০২ টাকা ।
মূলত সরকারী ভর্তূকী বা রি-ইন্সুরেন্স সুবিধা না থাকা, কারীগরি সহযোগিতার অভাব এবং সরকারের সুনির্দিষ্ট কোন নীতি বা লক্ষ্য না থাকায় প্রকল্পটি ব্যর্থ হয়ে যায় । এছাড়া প্রধান কার্যালয়ের কর্মকর্তা কর্তৃক মাঠ পরিদর্শনের পর দাবী পরিশোধ করা হতো বিধায় এটি ছিল সময় সাপেক্ষ ও বিরক্তিকর পদ্ধতি। সরকারী নীতি নির্ধারক ও বানিজ্য মন্ত্রণালয়ের অবহেলার কারনে এক পর্যায়ে প্রকল্পটি বন্ধ করে দিতে হয় ।
নতুন ভাবে শস্য বীমা:
আমাদের দেশে দীর্ঘদিন ধরে শস্যবীমা চালুর দাবী উঠছে বিভিন্ন মহল থেকে। এ প্রেক্ষিতে বর্তমান সরকার ২০১১-১২ অর্থবছরে বাংলাদেশ ব্যাংকের পৃষ্ঠপোষকতায় সাধারণ বীমা কর্পোরেশনের মাধ্যমে সিলেটে পরীক্ষামূলক একটি প্রকল্প গ্রহণ করে। গত একবছরের অভিজ্ঞতায় দেখা যায় উক্ত প্রকল্পে শতভাগ সফলতা এসেছে। এটা নিশ্চয়ই আমার খবর। তাছাড়া যদি সব সময় শতভাগ সফলতা নাও আসে,তবুও শস্যবীমা চালু করা প্রয়োজন আমাদের কৃষক তথা কৃষির স্বার্থেই।
কেননা বন্যা, জলোচ্ছাস, ঘূর্নিঝড়, নদী ভাঙ্গন এদেশের কৃষকদের নিত্যসঙ্গী। নতুন করে যোগ হয়েছে উত্তরাঞ্চলের খরা এবং দক্ষিনাঞ্চলের জলাবদ্ধতা ও লবনাক্ততা। আর ফসল উৎপাদনে পোঁকামাকড় ও রোগবালাই এর আক্রমণ, সুদখোর মহাজনদের উৎপাত তো রয়েছেই। সম্প্রতি অসাধু বীজ ব্যবসায়ীদের কারনে কৃষকদের সর্বসাšত হওয়ার ঘটনাও ঘটছে অহরহ। এসব কিছুর ভিতর দিয়েই চলছে আমাদের আবহমান কৃষি। সময়ের পরিক্রমায় জীবন সংগ্রামে পরাজিত কৃষকরা মাঝারী থেকে হয়েছে প্রাšিতক আর প্রাšিতক থেকে হয়েছে ভূমিহীন ।
বেসরকারী উদ্যোগে শস্য বীমা কার্যক্রম
সম্প্রতি কৃষকদের জন্য শস্যবীমা চালু করেছে আরডিআরএস-বাংলাদেশ। দেশে বেসরকারীভাবে প্রথম কুড়িগ্রামের ফুলবাড়ীতে শস্যবীমা চালুর কথা জানায় তারা। পল্লী কর্মসহায়ক ফাউন্ডেশন এ প্রকল্পে সহায়তা করছে।
সুপারিশ মালা:
বাংলাদেশের প্রায় ৭০ ভাগ কৃষকই ক্ষুদ্র, প্রান্তিক ও ভূমিহীন। এসব কৃষকদের সুরক্ষার জন্য ক্ষুদ্র ঋনের মতো ক্ষুদ্র শস্যবীমা কার্যক্রম গ্রহণ করা প্রয়োজন। আর সে লক্ষ্যে কতিপয় সুপারিশ করা হলো:

১. শস্যবীমাকে বিশেষ গুরুত্ব দিয়ে সরকারের কৃষিতে প্রদত্ত ভর্তূকীর একটি অংশ শস্যবীমার জন্য বরাদ্ধ রাখা দরকার।

২. বাংলাদেশে শস্যবীমা কার্যক্রম চালানোর জন্য দক্ষ ও প্রশিক্ষিত জনবল নেই। এজন্য সরকারীভাবে প্রশিক্ষণ ইনস্টিটিউট গড়ে তোলা দরকার।
৩. শস্যবীমার সুফল সম্পর্কে কৃষকদেরকে সচেতন করা দরকার। সেজন্য ব্যাপক প্রচার-প্রপাগান্ডার দিকে নজর দেয়া প্রয়োজন।
৪. প্রথমদিকে প্রণোদনা হিসাবে প্রান্তিক ও ভূমিহীন কৃষকদেরকে শতভাগ প্রিমিয়াম ভর্তূকী দেয়া যেতে পারে। এছাড়া বড় খামারীদের ক্ষেত্রে, সরকারী ঋণ পাবার শর্ত হিসাবে শস্যবীমা বাধ্যতামূলক করা যেতে পারে ।
৫. এ বিষয়ে মাঠ পর্যায়ে জরিপ ও প্রায়োগিক গবেষণার প্রয়োজন রয়েছে। এজন্য গবেষণাধর্মী পাইলট প্রকল্প হাতে নেয়া যেতে পারে ।
৬. শস্যবীমা কার্যক্রমটি একটি নতুন বিষয় সেজন্য সং্িশ্লস্ট আইন সমূহ যুগোপযোগী করতে হবে।
৭. আমাদের দেশের অতীত অভিজ্ঞতা ও পাশ্ববর্তী দেশের শস্যবীমা কার্যক্রমের ভিত্তিতে দেশে নতুন করে দীর্ঘমেয়াদী কর্মপরিকল্পনা গ্রহণ করা উচিত ।

পরিশেষে,কৃষিই এ দেশের অর্থনীতির মূল চালিকা শক্তি হলেও আজ পর্যন্ত কৃষকদের সুরক্ষার কোন প্রাতিষ্ঠানিক ব্যবস্থাই এ দেশে গড়ে উঠেনি। ক্রমবর্ধমান জনসংখ্যার খাদ্যনিরাপত্তা ও স্থিতিশীলতার জন্য সরকারি বেসরকারি পর্যায় থেকে শস্য বীমা কার্যক্রমকে একটি প্রাতিষ্ঠানিক রুপ লাভ করবে – এটাই এখন সময়ের দাবী। আর এ জন্য জাতীয় বাজেটে পর্যাপ্ত বরাদ্ধ রেখে পরিকল্পনা মাফিক এগুতে হবে।

লেখক : পিএইচডি গবেষক ও মৃত্তিকা বিজ্ঞানী,মৃত্তিকা সম্পদ উন্নয়ন ইনস্টিটিউট,জামালপুর।

কৃষির আরো খবর জানতে আমাদের ফেসবুক পেজে লাইক দিনঃকৃষিসংবাদ.কম

Exit mobile version