কৃষিসংবাদ

জামালপুরের দেওয়ানগঞ্জে ই-কৃষি বাস্তবায়নে এসএএও-দের মাঝে ট্যাব বিতরণ

এসএএও-দের মাঝে ট্যাব বিতরণ
মো. মোশারফ হোসেন (বিশেষ প্রতিনিধি) :

এসএএও-দের মাঝে ট্যাব বিতরণ ঃ ডিজিটাল কৃষিসেবা তথা ই-কৃষিসেবা বাস্তবায়ন নিশ্চিত করার লক্ষ্যে জামালপুর জেলার দেওয়ানগঞ্জ উপজেলায় উপসহাকারী কৃষি কর্মকর্তা (এসএএও)-দের মাঝে ১২ টি ট্যাব বিতরণ করা হয়েছে।

জানাগেছে, এনএটিপি-২ প্রকল্পের বিশেষ উদ্যোগে ও অর্থায়নে ওইসব ট্যাব বিতরণ করা হয়। এসএএও-দের সমন্বয়ে সাপ্তাহিক সভা ও প্রশিক্ষণ অনুষ্ঠানের এক ফাঁকে উপজেলা কৃষি অফিসের মিলনায়তনে সংক্ষিপ্তাকারে ট্যাব বিতরনী অনুষ্ঠানের আয়োজন করা হয়।

এতে উপজেলা কৃষি কর্মকর্তা কৃষিবিদ মতিয়ার রহমানের সভাপতিত্বে প্রধান অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন অতিরিক্ত উপ-পরিচালক কৃষিবিদ সাইফুল আজম খান। এসময় দেওয়ানগঞ্জ উপজেলা কৃষি অফিসে কর্মরত কৃষি সম্প্রসারণ কর্মকর্তা (এইও) কৃষিবিদ দেলোয়ার হোসেনসহ উপজেলায় কর্মরত উপসহাকারী কৃষি কর্মকর্তা (এসএএও) ও অন্যান্য কৃষি কর্মকর্তা এবং বিভিন্ন গনমাধ্যমের সাংবাদিক ভাইয়েরা উপস্থিত ছিলেন। সময়োপযোগী এই উদ্যোগকে স্বাগত জানিয়ে অনেকেই বলেন, ট্যাব বিতরণের মাধ্যমে এখন থেকে ই-কৃষি সেবার মান আরও একধাপ এগিয়ে গেলো।

রোপা আমন চাষে জিঙ্ক সমৃদ্ধ ব্রিধান-৬২ জাতে আশার আলো

দিন দিন জনসংখ্যা বাড়ছে, ফলশ্রুতিতে কমছে কৃষি জমির পরিমাণ। তাই বর্তমান সরকার ও মাননীয় কৃষি মন্ত্রী বেগম মতিয়া চৌধুরীর একান্ত লক্ষ্য- একই জমিতে বার বার বিভিন্ন ফসল উৎপাদন করা। এই লক্ষ্যে পৌঁছে সফলতা অর্জনের জন্য নিরলস কাজ করে যাচ্ছে কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তর ও সংশ্লিষ্ট বিভিন্ন কৃষি বিভাগ। রোপা আমন চাষে জিঙ্ক সমৃদ্ধ ব্রিধান-৬২ জাতে কৃষকরা আশার আলো দেখছেন।

বাংলাদেশ ধান গবেষণা ইন্সটিটিউট বিভিন্ন আধুনিক টেকনোলজির মাধ্যমে প্রতিনিয়ত স্বল্পজীবনীকাল সম্পন্ন ফসলের বিভিন্ন জাত উদ্ভাবন করে যাচ্ছে। তার অংশ হিসেবে। এইসব উদ্ভাবনের মধ্যে ব্রিধান-৬২ জাতের ধানটি অতি গুরুত্বপূর্ণ একটি জাত। এই ধানের গুরুত্ব ও চাহিদা দিন দিন বাড়েই চলছে। কৃষকদের কাছে হয়ে উঠছে অধিক জনপ্রিয়। চলতি মৌসুমে রোপা আমন চাষে ব্রিধান-৬২ জাতের ধানের বাম্পার ফলন হয়েছে। হেক্টর প্রতি এই ধানের ফলন হচ্ছে ৩ মেট্রিকটন থেকে ৩.২৩ মেট্রিকটন। আর এই জাতের জীবনকাল ১০০ দিন থেকে ১০৫ দিন। ফলে অল্প সময়ে অধিক ফলন পাওয়ার আশায় কৃষকরা এই ধান চাষে ঝুঁকছেন।

কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তর ময়মনসিংহ অঞ্চলের অতিরিক্ত পরিচালক কৃষিবিদ আসাদ উল্লাহ জানান, চলতি মৌসুমে শেরপুর, জামালপুর, নেত্রকোণা ও ময়মনসিংহ জেলার বিভিন্ন এলাকায় এই জাতের ধান চাষ করা হয়েছে। কৃষকের মাঝে বীজ, সার ও সাইনবোর্ড সহায়তা প্রদান করা হয়েছে। তিনি আরও জানান, ইতোমধ্যে ব্রিধান-৬২ কর্তন শুরু হয়েছে। এই জাতের ধানের গড় জীবনীকাল ১০০ দিন হতে ১০৫ দিন এবং প্রতি হেক্টরে গড় উৎপাদন ৩ মেট্রিকটন থেকে ৩.৫০ মেট্রিকটন। অল্প সময় ও শ্রমে অতিরিক্ত ফসল পাওয়া যাচ্ছে। এতে সেচ ও বালাইনাশক অপেক্ষাকৃত কম লাগে, তাই ব্রিধান-৬২ জাতের গুরুত্ব ও চাহিদা ক্রমেই বাড়ছে। তাছাড়া ভালো ফলন হওয়ায় কৃষক ও কৃষি কর্মকর্তারা বেশ খুশি। তারা বলেন ফলন একটু কম হলেও, স্বল্প কালীন আবাদ হওয়ায় একই জমিতে অন্য আবাদ করা যায়, তাই কৃষকরা লাভবান হবেন এটাই স্বাভাবিক বলে জানান, অতিরিক্ত উপ-পরিচালক কৃষিবিদ সাইফুল আজম খান। তিনি আরও জানান, এই জাতের ধান (ব্রিধান-৬২) জিঙ্ক সমৃদ্ধ হওয়ায় শিশুদের মেধা বিকাশে বিশেষ ভুমিকা পালন করে।

গত ২৫ সেপ্টেম্বর, মঙ্গলবার জামালপুর সদর উপজেলার কৃষক জনৈক মিজানুর রহমানের চাষ করা ব্রিধান-৬২ জাতের মাঠের প্রথম নমুনা শস্য কর্তন অনুষ্ঠিত হয়েছে। ওই নমুনা শস্য কর্তন ও মাঠ দিবসের মাধ্যমে উপরোক্ত তথ্যগুলো নিশ্চিত হওয়া গেছে। ওই নমুনা শস্য কর্তন দিবসে কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তর ময়মনসিংহ অঞ্চলের অতিরিক্ত পরিচালক কৃষিবিদ আসাদ উল্লাহ, উপপরিচালক ড. মো. রেজাউল ইসলাম, জামালপুর খামার বাড়ীর উপপরিচালক কৃষিবিদ মো. আমিনুল ইসলাম, জামালপুর সদর উপজেলা কৃষি কর্মকর্তা কৃষিবিদ মো. শাখাওয়াত ইকরামসহ অন্যান্য কৃষি কর্মকর্তাগন উপস্থিত ছিলেন। ওই মাঠ দিবসের বক্তব্যের তথ্যে জানাগেছে, এই ধান স্বল্প কালীন আবাদ হওয়ায় এই ধান কাটার পরে একই জমিতে শীতকালীন শাক সবজী চাষ করা যায়, ফলে কৃষকরা ব্রিধান-৬২ জাতের রোপা আমনের চাষ বাড়াতে পারলে কৃষকরা অধিক লাভবান হবেন বলে মনে করছেন কৃষি কর্মকর্তারা।

Exit mobile version