কৃষিসংবাদ

শেরপুরের নকলায় ধান ক্ষেতে বাকানী রোগ : কৃষকের মাথায় হাত

মোঃ মোশারফ হোসেন, শেরপুর :

খাদ্যশস্যে উদ্বৃত্ত শেরপুরের নকলা উপজেলায় চলতি বোরো মৌসুমে ধানের ক্ষেতে বাকানী (বীজ বাহিত) রোগে আক্রান্ত হয়ে মারাত্মক ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে কৃষক। বিভিন্ন এলাকার ধানের ফসলী মাঠ পরিদর্শনে গিয়ে ক্ষতিগ্রস্ত কৃষকদের কাছে জানা গেছে, বিআর-৬১ জাতের ধানের সবুজ ক্ষেত দেখে প্রথমে তাদের মুখে হাসির ঝিলিক দেখা দিলেও ধানের থোর হওয়ার পূর্ব মুহুর্তে মড়ক দেখা দেওয়ায় মহাচিন্তায় পড়েছেন তারা। ক্ষতিগ্রস্ত কৃষকের সাথে কথা বলতে গেলে অনেকেই কান্নায় ভেঙ্গে পড়েন।

কৃষি অফিস সূত্রে জানা গেছে, কৃষি মন্ত্রণালয়ের ‘চাষী পর্যায়ে উন্নত জাতের ধান, গম ও পাট বীজ উৎপাদন, সংরক্ষণ ও বিতরণ’ প্রকল্পের আওতায় উপজেলায় ১৫ জন কৃষককে দিয়ে প্রদর্শনীর আওতায় প্রায় ১৫ একর জমিতে বিএডিসি’র উদ্ভাবিত বিআর-৬১ জাতের ধান চাষ করানো হয়। তাছাড়া নতুন ধানের উৎপাদন বেশি হবে ভেবে, অনেক কৃষক এ জাতের ধান চাষ করেছেন। কিন্তু ক্ষেত বাকানী বা বীজ বাহিত রোগে আক্রান্ত হওয়ায় কৃষকরা আজ চরম ক্ষতির সম্মুখীন।

উরফা ইউনিয়নের সিংগুয়া এলাকার কৃষক ও প্রাথমিক বিদ্যালয়ের শিক্ষক মোঃ আকবর আলী জানান, কৃষি অফিসের পরামর্শে তিনি এক একর জমিতে প্রদর্শনীর আওতায় এবং আরও এক একর জমিতে নিজ উদ্যোগে বিআর-৬১ জাতের ধান চাষ করে এখন পড়েছেন মহা বিপদে। এবছর খাওয়ার জন্য তাকে ধান কিনতে হবে। ছেলে মেয়ের শিক্ষা খরচসহ সংসার খরচ চালাতে তাকে পড়তে হবে মহা সংকটে।

উপসহকারী কৃষি কর্মকর্তা মোঃ উমেদ আলী, আশরাফুল ও ইসমাতুন মাসুমা জাহান পলাশী বলেন, হঠাৎ করেই বিআর-৬১ জাতের ধানের ক্ষেতে এরোগের লক্ষন দেখা দেওয়ায় কৃষকদের বিভিন্ন পরামর্শ সেবা দেওয়া হয়েছে। তাতে কোন কাজে না আসায় উর্ধ্বতন কৃষি কর্মকর্তাদের মাঠ পরিদর্শন করতে অনুরোধ করা হয়। উর্ধ্বতন কৃষি কর্মকর্তারা সরেজমিনে রোগাক্রান্ত ধানের ক্ষেত দেখে জানান যে, এটা বীজ বাহিত রোগ। এ রোগের কোন সু-নির্দিষ্ট চিকিৎসা নেই।

এ বিষয়ে উপজেলা কৃষি কর্মকর্তা হুমায়ূন কবীর জানান, বিএডিসি কতৃক সরবরাহকৃত বিআর-৬১ জাতের ধানের বীজে সমস্যা থাকায় এমনটা হয়েছে। বিষয়টি জেলার খামার বাড়ীর উপ-পরিচালক আশরাফ উদ্দিন সহ কৃষি বিভাগের সর্বোচ্চ উর্র্ধ্বতন কর্মকর্তাদের জানানো হয়েছে। তিনি আরও জানান, বিআর-৬১ জাতের ধানের ক্ষেতে এই বাকানী বা বীজ বাহিত রোগটি সারা দেশ ব্যাপী দেখা দিয়েছে। তবে কৃষকদের ক্ষতি পূরণ করতে তাদেরকে নানা বিষয়ে পরামর্শ দেওয়া হচ্ছে বলেও তিনি জানান।

Exit mobile version