কৃষিসংবাদ

নকলায় দিগন্তজুড়ে নেরিকা মিউট্যান্ট ও ব্রিধান-৪৮ : লক্ষ্যমাত্রার দ্বিগুন অর্জন!

নেরিকা মিউট্যান্ট

মোঃ মোশারফ হোসেন, নকলা (শেরপুর) :

শেরপুরের নকলায় যে দিকে দৃষ্টি যায় সবুজের সমারোহ নজরে পড়ে। নকলার দিগন্তজুড়ে শুধু আউশ ধানের আবাদ। এবছর লক্ষ্যমাত্রার দ্বিগুন অর্জন সম্ভব হয়েছে। নামে মাত্র শ্রম, সার ও কীটনাশক প্রয়োগ এবং বিনাসেচে দ্বিগুণ লাভ হওয়ায় কৃষকরা আউশ আবাদের দিকে ঝুঁকছেন।

গেল বছর লক্ষ্যমাত্রা ও অর্জন ছিলো মাত্র ২১৩ একর। চলতি মৌসুমে লক্ষ্যমাত্রা একই থাকলেও অর্জন হয়েছে ৪০০ একর, যা গত বছরের লক্ষ্যমাত্রা ও অর্জনের দ্বিগুন। এতে ৩৭ টি প্রদর্শনী প্লট রয়েছে। তার মধ্যে চাষি পর্যায়ে উন্নতমানের ধান, গম ও পাট বীজ উৎপাদন প্রকল্পের আওতায় ১৫টি, রাজস্ব বাজেটের আওতায় ২০টি এবং সমন্বিত কৃষি উন্নয়নের মাধ্যমে পুষ্টি ও খাদ্য নিরাপত্তা নিশ্চিত করন প্রকল্পের আওতায় ২ টি প্রদর্শনী প্লট এবং ৪৩৫ বিঘা জমিতেও আউশ ধান রোপন করা হয়েছে। উপজেলা কৃষি অফিস সূত্রে এসব তথ্য জানা গেেেছ। তথ্যমতে, এবছর ব্রিধান-৪৮ ও নেরিকা মিউট্যান্ট জাতের ধান বেশি চাষ করা হয়েছে। আর সবচেয়ে বেশি চাষ করা হয়েছে বানেশ্বরদী ইউনিয়নে।

বানেশ্বরদী ব্লকের উপসহকারী কৃষি কর্মকর্তা আবুল কালাম আজাদ বলেন, ওই ব্লকের আউশ ধানের মাঠ দেখে অন্যান্য এলাকার কৃষকরা ঝুঁকছেন। কৃষি সম্প্রসারণ কর্মকর্তা আব্দুল ওয়াদুদ জানান, মে ও জুন মাসে আউশ ধান রোপন করা হয়েছে। আবহাওয়া অনুকূলে থাকায় এবার লক্ষ্য মাত্রার দ্বিগুণ অর্জন হয়েছে। বাম্পার ফলন হবে বলে আশা করছেন কৃষকসহ কৃষি কর্মকর্তারা। তারা বলেন, আগামীতে উপজেলায় আউশ আবাদ কয়েকগুণ বৃদ্ধি পাবে। বানেশ্বরদী এলাকার ছোট মোজার পাড়ার কৃষক নজরুল, মোজারের কৃষক আজিজুল ও পোলাদেশীর সুরুজ মিয়াসহ বেশ কয়েকজন কৃষক জানান, ব্রিধান-৪৮ এর জীবন কাল ১১০দিন, গাছের উচ্চতা ১০৫ সেমি.। চালের ধরন মাজারী মোটা, ভাত ঝরঝরে এবং হেক্টর প্রতি ফলন সাড়েপাঁচ টন। ভূরদী কৃষিপণ্য উৎপাদক কল্যাণ সংস্থার প্রতিষ্ঠাতা ছাইয়েদুল হক, সাধারণ সম্পাদক হেলাল, সদস্য ঈসমাইল, বেলালসহ কয়েকজন জানান, আগামীতে আউশ ধান চাষ উপযোগী তাদের সব জমিতেই আবাদ করবেন।

এবিষয়ে উপজেলা কৃষি কর্মকর্তা হুমায়ুন কবীর বলেন, আউশ আবাদের উপযোগী সব জমিকে ধান চাষের আবাদের উপযোগী জমির সুষ্ঠু ব্যবহার নিশ্চিত করে, কৃষি পণ্য উৎপাদ বৃদ্ধির লক্ষ্যে আউশ আবাদ করতে কৃষকদের নিয়মিত পরামর্শ দেওয়া হচ্ছে। এবছর উপজেলায় লক্ষ্যমাত্রার চেয়ে দ্বিগুণ অর্জন হওয়ায় এমনটাই প্রমাণ করে। শেরপুর খামারবাড়ীর উপ-পরিচালক আশরাফ উদ্দিন ও এডিডি পিপি আব্দুস ছাত্তার সম্প্রতি আউশ ধানের মাঠ পরিদর্শণে এসে বলেন, সারা শেরপুর জেলায় আউশ বিপ্লব শুরু হয়েছে। তার মধ্যে নকলাতেই বেশি চাষ করা হয়েছে।

গত বছরে তৈরীকৃত সিটিজেন চার্টার মতে, উপজেলার ১ হাজার ৭৫০ একর জমি আজও চাষের আওতায় আনা সম্ভব হয়নি। তবে ৩২ হাজার ৪৫ টি কৃষি পরিবার উপজেলার ৭৬ হাজার ৯০০ একর আবাদী জমিতে কৃষি কাজ করেন। তার মধ্যে এক ফসলী জমি ২ হাজার ৭৫০ একর, দুই ফসলী ২২ হাজার ৬০০ একর ও তিন ফসলী জমি ৯ হাজার ৬৫০ একর এবং নীট ফসলী জমি ৩৬ হাজার ২৫০ একর।

Exit mobile version