কৃষিসংবাদ

নকলা থানার ভিতরের পরিত্যক্ত জমিতে সবজি চাষে সফলতা

পরিত্যক্ত জমিতে সবজি চাষে সফলতা

মো. মোশারফ হোসেন, নকলা (শেরপুর) প্রতিনিধি:

পরিত্যক্ত জমিতে সবজি চাষে সফলতা : শেরপুর জেলার নকলা উপজেলাধীন নকলা থানার ভিতরের পরিত্যক্ত জায়গায় পেঁপে চাষ করে সবাইকে তাক লাগিয়ে দিয়েছেন এএসআই রতন চৌধুরী। তাছাড়া চন্দ্রকোণা তদন্ত কেন্দ্রের বাউন্ডারীর ভিতরে পেঁপেসহ বিভিন্ন সবজি ও বাউন্ডারীর বাহিরে পরিত্যক্ত জায়গায় কবুতর পালন করে রীতিমত সবার আলোচনার বিষয়ে পরিনত হয়েছেন ওই তদন্ত কেন্দ্রের পুলিশ কর্মকর্তাগন।

এএসআই রতন চৌধুরী জানান, তিনি ২০১৭ সালের শুরুর দিকে পত্রিকার মাধ্যমে পরিত্যক্ত ও পতিত জমিকে ব্যবহারের উপায় সম্পর্কে জেনে উৎসাহ পান। পরে নিজের কর্মস্থল নকলা থানায় পরীক্ষামূলক ভাবে পেঁপে চাষের পরিকল্পনা করেন। স্থানীয় অফিসিয়াল উর্ধ্বতন তথা নকলা থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) খান আব্দুল হালিম সিদ্দিকীর অনুমতি নিয়ে থানা বাউন্ডারীর ভিতরের পরিত্যক্ত জমিতে ২০১৭ সালে উন্নত জাতের ৫টি পেঁপে গাছ রোপন করেন। কিছুদিন পরেই ওইসব গাছে ফুল-ফল আসে। উৎপাদন ভালো দেখে রতন চৌধুরীর মনে নতুন করে আশার সঞ্চার হয়। ২০১৭ সালের মাঝামাঝির দিকে থানা বাউন্ডারীর ভিতরের অন্যান্য পরিত্যক্ত জমি পরিষ্কার করে সেখানে ১২০টি পেঁপে গাছের চারা রোপন করেন। এতে প্রতিটি পেঁপে গাছের চারা কিনা বাবদ ৬ টাকা করে ও ফলন আসা পর্যন্ত পরিচর্যায় মোট ব্যয় হয় ২ হাজার ২০০ কিংবা ২ হাজার ৫০০ টাকা। আর সবকয়টি গাছ হতে প্রথম বছরেই অন্তত অর্ধলক্ষাধিক টাকার পেঁপে পাওয়া যাবে বলে তিনি আশা করছেন।

সরজমিনে এএসআই রতন চৌধুরীর সাথে কথা বলে জানা গেছে, তার রোপন করা ১২০ টি গাছের মধ্যে ১২টি গাছ পুং হয়। পরাগায়নের সুবিধার্থে ৫টি পুং গাছ রেখে বাকি গুলো কেটে ফেলা হয়েছে। আর ১০৮টি স্ত্রী গাছের মধ্যে ৮৬ টি গাছে পেঁপে ধরেছে। অন্যগুলোতে ফুলে ফুলে ভরে গেছে। তিনি জানান, প্রতিটি পেঁপে গাছের চারা কিনা বাবদ ৬ টাকা করে ও ফলন আসা পর্যন্ত পরিচর্যায় মোট প্রায় আড়াই হাজার টাকা ব্যয় হয়েছে। এএসআই রতন চৌধুরী আশা ব্যক্ত করে বলেন, সব কয়টি গাছ হতে প্রথম বছরেই অন্তত অর্ধলক্ষাধিক টাকার পেঁপে পাওয়া যাবে। তবে ওইসব পেঁেপ তিনি বিক্রি করবেন না বলে এই প্রতিবেদককে জানিয়েছেন। কাঁচা অবস্থায় তরকারি হিসেবে এবং পাঁকলে নকলা থানার সব পুলিশ কর্মকর্তা পরিবার-পরিজন মিলে খাবেন বলে তিনি জানান। তিনি আরও জানান, তার দেখাদেখি চন্দ্রকোণা তদন্ত কেন্দ্রের কর্মকর্তাগন তাদের তদন্ত কেন্দ্রের বাউন্ডারীর ভিতরে পেঁপেসহ বিভিন্ন সবজি ও বাউন্ডারীর বাহিরে পরিত্যক্ত জায়গায় কবুতর পালন করে রিতীমত সবার আলোচনার বিষয়ে পরিনত হয়েছেন।

পুলিশ সদস্য (ডিএসবি) খলিলুর রহমান জানান, তিনি সময় সুযোগ পেলেই রতন চৌধুরীর পেঁপে বাগানে ইচ্ছাকৃত ভাবে মনের আনন্দে পরিচর্যা করেন। সে আরও জানান, এই পেঁপে বাগানের সফলতা দেখে নিজের বাড়িতেও বেশ কিছু পেঁপে গাছ রোপন করেছেন তিনি। এবিষয়ে ওসি খান আব্দুল হালিম সিদ্দিকী বলেন, এএসআই রতন সাহেবের উদ্যোগ ও পরিত্যক্ত জমিতে পেঁপে বাগানের সফলতা সবাইকে তাক লাগিয়ে দিয়েছে। দেশের সব কয়টি থানার পরিত্যক্ত জমিতে এমন সবজি ও ফলের বাগান গড়ে তোলতে পারলে, দেশের মোট পুষ্টি চাহিদা পুরনে কিছুটা হলেও সহায়ক ভুমিকা পালন করবে বলে তিনি মনে করেন। তাছাড়া বেকার যুবক ও যুবনারীরা পরিত্যক্ত জমিতে পেঁপেসহ বিভিন্ন সবজি চাষ করে বেকারত্ব গোচাতে আগ্রহী হবেন বলেও তিনি মনে করছেন।

 

Exit mobile version