বাংলাদেশ কৃষি বিশ্ববিদ্যালয়ে ভেটেরিনারি শিক্ষার্থীদের মানববন্ধন

ভেটেরিনারি শিক্ষার্থীদের মানববন্ধন

 

মো. আউয়াল মিয়া, বাকৃবি প্রতিনিধিঃ

ভেটেরিনারি শিক্ষার্থীদের মানববন্ধন
বাংলাদেশ কৃষি বিশ্ববিদ্যালয়ে (বাকৃবি) প্রাণিসম্পদ অধিদপ্তরের সর্বস্তরের ডক্টর অব ভেটেরিনারি মেডিসিন (ডিভিএম) ডিগ্রীধারীদের নিয়োগের দাবিতে রবিবার দুপুর ১২টার দিকে ভেটেরিনারি শিক্ষার্থীদের মানববন্ধন অনুষ্ঠিত হয়।

বিশ্ববিদ্যালয়ের শিল্পাচার্য জয়নুল আবেদিন মিলনায়তনের সামনে ওই মানববন্ধনের আয়োজন করে বাংলদেশ ভেটেরিনারি ছাত্র সমিতি ও বাংলাদেশ ভেটেরিনারি স্টুডেন্ট ফেডারেশন (বিভিএসএফ)। এতে বক্তারা বলেন, প্রাণিসম্পদ অধিদপ্তরের জাতীয় কৃষি প্রযুক্তি প্রকল্পে ১৩৫টি প্রাণিসম্পদ সম্প্রসারণ কর্মকর্তা পদে মঙ্গলবার (১১ এপ্রিল) ৯৫ জনকে নিয়োগ দেয় অধিদপ্তর। ওই নিয়োগে ৯০ জন ভেটেরিনারি ডিগ্রিধারীকে চাকরি দেওয়া হয়েছে। অন্যদিকে মাত্র ৫ জন পশুপালন ডিগ্রিধারী রয়েছেন। কমসংখ্যক পশুপালন গ্র্যাজুয়েটদের নিয়োগ দেয়ায় পশুপালন অনুষদের শিক্ষার্থীরা ওই নিয়োগ বাতিল করার জন্য আন্দোলন ও বিক্ষোভ মিছিল করে। যা সম্পূর্ণ অযৌক্তিক। তাই ভেটেরিনারি ডিগ্রিধারীদের নিয়োগ বহাল রাখার দাবি জানান তারা। এতে অনুষদের প্রায় শতাধিক শিক্ষার্থী অংশগ্রহণ করেন।

এবিষয়ে মৎস্য ও প্রাণিসম্পদ মন্ত্রণালয়ের যুগ্ম সচিব কাজী ওয়াসিউদ্দিন বলেন, প্রকল্পের চাহিদা অনুযায়ী ভেটেরিনারি ও পশুপালন ডিগ্রিধারীদের আবেদন চাওয়া হয়েছিল। এরপর লিখিত ও মৌখিক পরীক্ষায় উত্তীর্ণদের নিয়মানুযায়ী নিয়োগ দেওয়া হয়েছে। সেখানে কে বা কারা কতজন নিয়োগ পেয়েছেন তা দেখা হয়নি। তা ছাড়া কয়েকটি বিশ্ববিদ্যালয়ে সমন্বিতভাবে ভেটেরিনারি ডিগ্রি দেওয়ায় স্বভাবতই এ ডিগ্রিধারী প্রার্থী অনেক বেশি ছিল।

*****

বাকৃবি শিক্ষক সমিতির নিবার্চন বিলম্ব
ব্যালটের ছবিতোলা নিয়ে বির্তক হওয়ায় বাংলাদেশ কৃষি বিশ্ববিদ্যালয়ের (বাকৃবি) শিক্ষক সমিতির নির্বাচন বিলম্ব হচ্ছে বলে সংশ্লিষ্ট সূত্রে জানা যায়।এদিকে নির্বাচনী আচরণবিধি মেনে দ্রুত শিক্ষক সমিতির নির্বাচনের দাবি জানিয়েছে বিএনপিপন্থী শিক্ষকদের সংগঠন সোনালী দল। রবিবার সোনালী দলের সভাপতি প্রফেসর ড. মো. ফজলুল আউয়াল মোল্লাহ্ ও সাধারণ সম্পাদক প্রফেসর ড. মো. শওকত আলী স্বাক্ষরিত এক বিবৃতিতে এ দাবি জানানো হয়। মোবাইলে যোগাযোগ করা হলে বিশ্ববিদ্যালয়ে আওয়াপন্থী শিক্ষকদের সংগঠন গণতান্ত্রিক শিক্ষক ফোরামের সাধারণ সম্পাদকও একই দাবি করেন। এদিকে ‘ব্যালটের ছবি তোলা’ বিষয়টি নিয়ে দু’পক্ষের সমঝোতা না হওয়ায় শিক্ষক সমিতির তারিখ ঘোষণা করা সম্ভব হয়নি বলে জানান শিক্ষক সমিতির সভাপতি।

সংশ্লিষ্টসূত্রে জানা যায়, বাকৃবি শিক্ষক সমিতির নিয়ম অনুযায়ী যে কোন কমিটির মেয়াদ এক বছর পূর্ণ হওয়ার আগেই কমিটির সভাপতি ও সাধারণ সম্পাদক পরবর্তী কমিটি গঠনের জন্য নির্বাচনের তারিখ ঘোষণা করবেন। যেখানে বিদায়ী সভাপতি নির্বাচনের প্রিজাইডিং অফিসার হিসেবে দায়িত্ব পালন করবেন। কিন্তু বর্তমান বাকৃবি শিক্ষক সমিতির মেয়াদ গত ৯ মার্চ শেষ হয়। কিন্তু এরপরও নির্বাচনের কোন তারিখ ঘোষণা না করায় সোনালী দলের পক্ষ থেকে দ্রুত শিক্ষক সমিতির নির্বাচনের দাবি জানানো হয়। এদিকে গত ৯ মার্চ শিক্ষক সমিতির সর্বশেষ মিটিংয়েও ‘ব্যালটের ছবি তোলা’ নিয়ে গণতান্ত্রিক শিক্ষক ফোরাম ও সোনালী দলের মধ্যে সমঝোতা না হওয়ায় নির্বাচনের তারিখ ঘোষণা করতে পারেনি শিক্ষক সমিতি। পরে বিষয়টি অমিমাংসীত রেখেই মিটিং শেষ হয়।
বিবৃতিতে আরো বলা হয়, শিক্ষক সমিতির নির্বাচনে ভোট প্রদানের পর দলীয় আনুগত্যের প্রমান স্বরূপ ‘ব্যালটের ছবি তোলা’ বিষয় নিয়ে অচলাবস্থা হওয়ায় বিশ্ববিদ্যালয়ের ভাবমূর্তি ক্ষুন্ন হচ্ছে বলে মনে করে সোনালী দল। এ অন্যায়টি ইতিপূর্বে হয়েছিল বিধায় শিক্ষক সমিতির সাধারণ সভায় ভোট প্রদানের পর ব্যালট পেপারের ছবি তোলা নিষিদ্ধ করা হয়েছে। এদিকে যথাসময়ে নির্বাচন না হওয়ায় শিক্ষকদের বিভিন্ন ন্যায্য দাবি দাওয়া আদায় ও স¦ার্থ সংশ্লিষ্ট বিষয় ব্যহত হচ্ছে। নির্বাচনে কোন শিক্ষক এ কাজটি করলে তাঁর ব্যালট বাতিলসহ উপযুক্ত শাস্তির দাবি জানাচ্ছে।
এবিষয়ে ফোরামের সাধারণ সম্পাদক অধ্যাপক ড. মো. সাইদুর রহমান বলেন, নির্বাচনী আচরণ বিধি মেনে আমরাও চাই অতিদ্রুত নির্বাচন হোক। শিক্ষক সমিতি না থাকায় শিক্ষকদের স্বার্থ সংশ্লিষ্ট অনেক কাজই থেমে আছে। ব্যালটের ছবি তোলা বিষয়ে জানতে চাইলে বলেন, এটি আমরাও সমর্থন করিনা।
একই বিষয়ে শিক্ষক সমিতির সভাপতি অধ্যাপক ড. মো. ছোলায়মান আলী ফকির বলেন, নির্বাচনে ‘ব্যালটের ছবি তোলা’ হলে এবং তা প্রমাণিত হলে তার ভোটটি গণনা করা হবে কিনা কিংবা তার কি শাস্তি হবে এ নিয়ে দু’পক্ষের মধ্যে মতবিরোধ থাকায় নির্বাচনের তারিখ ঘোষণা করা সম্ভব হয়নি। বারবার মিটিং করে সন্তোষজনক কোন সমাধানে না আসতে পারায় আমরা বিশ্ববিদ্যালয়ের ভিসি মহোদয়ের দৃষ্টি আকর্ষণ করেছি।
এবিষয়ে বাকৃবি ভিসি অধ্যাপক ড. মো. আলী আকবর বলেন, আমার কাছে নির্বাচন দাবি করা অযৌক্তিক। তবে একটি বিষয় নিয়ে সমস্যা সৃষ্টি হওয়ায় যেহেতু দু’পক্ষই আমার কাছে বিষয়টি সমাধানের দাবি জানিয়েছে আমি তাদের নিয়ে বসবো। ইতিমধ্যে একটি পক্ষের সাথে আলোচনা হয়েছে। তবে দু’পক্ষেরই ছাড় দেওয়ার মানসিকতা না থাকলে বিষয়টি সমাধান সম্ভব নয়।

*********

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *