শাহ কৃষি তথ্য পাঠাগার ও জাদুঘরের উদ্যোগে ‘কৃষকের ঈদ আনন্দ’ অনুষ্ঠিত

কৃষকের ঈদ আনন্দ

কৃষিসংবাদ ডেস্কঃ কৃষকের ঈদ আনন্দকাদা মাখা হাতে আপন মনে চুলা বানাচ্ছেন রহিমা বেগম, কয়েক জন সারিবদ্ধ হয়ে বসে ধারালো হাসুয়া দিয়ে চোখের পলক মধ্যে পেঁয়াজ কাটছেন, কম সময়ে পুকুর থেকে কত বেশী কে মাছ ধরাছে, পুকুরে নৌকার উপর ভেসে জাল দিয়ে মাছ ধরা, ফসলের মাঠের জীবন্ত বৈচিত্র দেখে রঙ তুলি দিয়ে চিত্রাঙ্কন ইত্যাদি রকমের খেলা নিয়ে গ্রামের কৃষক-কৃষাণি ও তাদের সন্তানদের নিয়ে ‘কৃষকের ঈদ আনন্দ’ নামে শাহ্ কৃষি তথ্য পাঠাগার ও জাদুঘরের পক্ষ থেকে গত ১৪ ই সেপ্টম্বরে কৃষি স¤পর্কিত খেলাধুলার আয়োজন করা হয়। নওগাঁর মান্দা উপজেলার কালিগ্রামে ২০০৮ সালে নিজ উদ্যোগে নিজ বাড়িতে গড়ে তোলেন শখের পাঠাগার, সংরক্ষণ করেন একজন কৃষকের দৈনন্দিন কৃষি কাজে ব্যবহৃত বিভিন্ন অঞ্চলের কৃষি যন্তপাতি।
দিনের শুরুতে কৃষকদের নিয়ে খেলার আয়োজন শুরু করা হয় এবং পর্যায়ক্রমে কৃষাণী ও তাদের সন্তানদের নিয়ে অন্যান্য খেলার আয়োজন করা হয়। যতই ঘড়ির কাটা এগোতে থাকে ততই উৎসব মুখর হয়ে ওঠে প্রতিযোগিতা। কৃষি কৃষকদের উন্নয়ন এবং বিশেষ আবদানের স্বীকৃতি স্বরুপ ১৫ জন ব্যাক্তিকে পুরুষ্কার প্রদান করা হয়। বিশেষ অবদানের এবং খেলাধুলায় বিজয়ী ৪০ জন পুরুষ্কার পান। পুরুষ্কার হিসাবে প্রত্যেককে একটি করে মাথাল দেওয়া হয়। মাথাল গুলো এদেশের বহুল ব্যবহৃত চাঁপাইনবাবগঞ্জের জেলা থেকে অনা হয়। এখানে উল্লেখ্য যে মাথাল সবচেয়ে বেশী ব্যবহার করে থাকেন নবাবগঞ্জ জেলার কৃষকরা।
সকাল থেকেই একটার পর একটা খেলা চলতে থাকে। তবে উল্লেখ যোগ্য খেলাগুলোর মধ্য হচ্ছে, নৌকায় চড়ে জাল খেওয়ানো, গাছ লাগানোর জন্য মাটিতে গর্ত খোড়া, হাত দিয়ে দড়ি পাকানো, গরুর দাড়ক ও খুটা তৈরী করা ইত্যাদি। কৃষাণিরা অংশগ্রহন করেন বিভিন্ন খেলায় যার মধ্যে, রুটি বানানো, মাটির চুলা বানানো, দ্রুত পেয়াজ কাটা, খড়ের বেড়া বানানো এছাড়াও কৃষক কৃষানীর সন্তানেরা ছিপ দিয়ে মাছ ধরা, কৃষি কবিতা পাঠ, ফসলের মাঠের জীবন্তবৈচিত্র দেখে রঙ তুলি দিয়ে চিত্রাঙ্কন প্রতিযোগিতা, ফসলের নাম লেখা ইত্যাদি প্রতিযোগিতায় অংশগ্রহন করে বিজয়ী হন।
খেলা শেষে শাহ্ কৃষি তথ্য পাঠাগার ও জাদুঘরের প্রফেসর ড. মতিউর রহমান সভাকক্ষে পুরুষ্কার বিতরনী অনুষ্ঠানের আয়োজন করা হয়। প্রধান অতিথি হিসাবে উপস্থিত ছিলেন ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের আই-এস-আর-টি বিভাগের প্রফেসর ড. মতিউর রহমান। সভায় সভাপতিত্ব করেন, রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়ের ডেপুটি চীপ ভেটেনারিয়ান ড. মোঃ হেমায়েতুল ইসলাম। বিশেষ অতিথি হিসাবে উপস্থিত ছিলেন, অডিট বিভাগের পরিচালক এ এইচ এম শামসুর রহমান, টি-এম-এস-এস মেডিকেল কলেজ ও হাসপাতালের পরিচালক ড. রাগিব আহসান, ড. কবীর উদ্দিন অহমেদসহ প্রমুখ।
কৃষি কৃষকদের উন্নয়ন এবং সহয়তাকারী হিসাবে বিশেষ আবদানের জন্য ১৫ জন ব্যাক্তিকে এবং খেলাধুলায় পুরুষ্কার হিসাবে ২৫ জনকে পুরুষ্কার দেওয়া হয়। অতিথিদের প্রত্যেকে বাংলার খড়ম উপহার দেওয়া হয়। কৃষি ও কৃষকের উন্নয়নে অবদানের জন্য যারা পুরুষ্কার পেয়েছেন, তাদের মধ্যে মমতা বেগম, শাহীন ফকির, আপাল উদ্দিন, তাপসী রাবেয়া ডা. শন্ত কুমার প্রাং ও আরো অনেকে। শেষে উপস্থিত সকলে শাহ্ কৃষি তথ্য পাঠাগারে আয়জনে দুপুরের খাবারে অংশগ্রহন করেন। অনুষ্টান পরিচালনা করেন বাংলাদেশ বেতারের সংবাদ পাঠক আব্দুর রোকন মাসুম।

কৃষির আরো খবরাখবর জানতে আমাদের পেইজে লাইকদিনঃ facebook.com/krishisongbad.com

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *